জাফিকুলের নামের পাশে লাল দাগ ‘দিদি’র বৈঠকে

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ ‘দিদি’র ডাকা বৈঠকে উপস্থিতির খাতায় লাল দাগ পড়ল ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের নামের পাশে। সারাদিনে দলের উঁচু নিচু কোনও নেতাকেই অনুপস্থিতির কারণ তিনি জানান নি বলেই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।

মুর্শিদাবাদের দুই সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্লক নেতৃত্ব যেমন উপস্থিত ছিলেন তেমনি জেলা পরিষদের সদস্য সভাপতিরাও উপস্থিত ছিলেন। অথচ সেই বৈঠকে ছিলেন না জাফিকুল। তবে তিনি কোথায় আছেন তাও দলের জানা নেই বলে দাবি জেলার একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বের।

২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়  জাফিকুল জড়িয়ে আছেন কি না তার তদন্ত করতেই  ডোমকলের গোবিন্দপুরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই রেড চলাকালীন অবশ্য বিধায়ক বাড়িতেই আসেন নি। তাঁকে না পেয়ে শিক্ষা ব্যবসায়ী জাফিকুলের বিএড, ডিএলএড,ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তল্লাশী চালিয়েছিলেন কেন্দ্রের গোয়েন্দারা।

দিনের শেষে অবশ্য লাল ট্রলি ভর্তি ২৮ লক্ষ টাকা আর অল্প কিছু গহনা, কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে এলাকা ছেড়েছিলেন তাঁরা। জাফিকুল সেই সময় ওই টাকা জমি বিক্রির টাকা বলে যদিও দাবি করেছিলেন। সেই যে সিবিআই এলাকা ছেড়েছেন তারপর থেকে সিবিআই আর ডোমকলের বিধায়ককে ডেকে পাঠায় নি । আর কোনও তল্লাশিও হয়নি তাঁর বাড়িতে।

তবে জাফিকুল ফিরে ছিলেন নিজের বাড়িতে। শুধু তাই নয় নিজের জন্মদিনকে হাতিয়ার করে জন সংযোগের পাশাপাশি এলাকাবাসীর তাঁর প্রতি আস্থা কতখানি তাও মেপে নিয়েছেন জন্মদিন উদযাপনের ফাঁকে। স্থানীয় জনসভাতেও সেই সময় একদিন উপস্থিত ছিলেন।

তাও এক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে অবশ্য নীরব জাফিকুল। দলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায় নি। দলের জেলা কার্যালয়ে আগে যেমন দেখা যেত তেমন আর আসেন না বলেই জানান  দৈনিক যাঁরা কার্যালয়ে আসেন সেই সব নেতা, কর্মীরা।  

সামনেই লোকসভা নির্বাচন সেই উপলক্ষেই কালীঘাটে ডাক পরেছিল জেলার নেতাদের। এদিন দিদির ডাকা সেই বৈঠকেও জাফিকুল না আসায় খানিকটা ভ্রু কুঁচকেছে জেলার নেতাদেরও। বৈঠক থেকে বেড়িয়ে কেউ কেউ বললেন “কৈ দেখলাম না তো।” কেউ বললেন “ হয়ত দিদিকে জানিয়েছেন তিনি কোথায় আছেন।” কেউ বা আবার হাসলেন, উত্তর এড়িয়ে গেলেন। তবে মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান বললেন, “৯৯ জন উপস্থিত থাকলে একজন অনুপস্থিত থাকলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়?” তবে অসুস্থততার কারণে ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিশ আলীও এদিন বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন।